বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোতে ওয়েব ডেভেলপারদের বর্তমান অবস্থা কেমন এ প্রশ্নটা করা হলে এর উত্তরটা দুই ভাবে পাওয়া যায়।
যারা নিয়মিত কাজ পাচ্ছেন তারা এক বাক্যেই বলবে ভালো আর যারা কাজের জন্য বিড করেও কাজ পাচ্ছেন না তারা বলবে ভালো না অবস্থা ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে। আর এ বিষয়ে নানা ধরনের অনূকূল এবং প্রতিকূল দুই ধরনেরই আলোচনা শোনা যায় বিভিন্ন ফোরাম, ব্লগ বা সোস্যাল সাইটসমূহে।
তবে কেন এ দুই ধরনের উত্তর পাওয়া যায় দু শ্রেনীর মনুষগুলোর কাছ থেকে?
আসলে মূল বিষয়টি হচ্ছে দক্ষতার উন্নয়ন ঘটানো অর্থাৎ যারা নিয়মিতভাবে তাদের কাজের দক্ষতার উন্নয়ন ঘটাতে পারছে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে তারাই মূলত কাজ পেয়ে যাচ্ছে খুব সহজেই এবং তাদের মধ্যে হয়তো অনেকে এমন ব্যস্ত সময় পার করছে যে তারা তাদের কাজের কিছু কিছু অংশ অন্যকে দিয়েও করিয়ে নিচ্ছেন অর্থাৎ তারা কাজের জন্য একটুও অবসর পাচ্ছেননা বিশ্রাম নেয়ার জন্য। আর যারা তাদের দক্ষতাকে বিশ্বের অন্যন্য দেশের ফ্রিল্যান্সারদের সাথে তাল মিলেয়ে উন্নয়ন ঘটাতে পারছেনা তারা পিছিয়ে পড়ছে।

আসলে আমরা সবাই জানি যে বর্তমান এ পরিবর্তনশীল বিশ্বে প্রতিনিয়তই পরিবর্তীত হচ্ছে মানুষের পছন্দ অপছন্দসহ কাজের গতি প্রকৃতি। আর পরিবর্তনশীলতার এ নিয়ম অনুসারে যারা ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোর মাধ্যমে তাদের কাজগুলো করিয়ে নিচ্ছেন তাদের চাহিদা বা পছন্দের পরিবর্তন ঘটছে প্রতিনিয়তই। আর যে সকল ফ্রিল্যান্সার সেই পরিবর্তনশীলতার সাথে নিজের কর্ম দক্ষতার উন্নয়ন ঘটাতে পারছেন না তারা কাজ হারাচ্ছে।
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে প্রতিযোগীতা বেড়ে যাচ্ছে ঠিকই কিন্তু তার যেটি বেশি বাড়ছে তা হলো দক্ষ ওয়েব ডেভলপারদের চাহিদা। প্রতিদিন নতুন হাজারও রকমের ওয়েব ডেভেলোপিং এর কাজ আসছে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে যার অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কাজের জন্য অভাব দেখা যায় দক্ষ ফ্রিল্যান্সারের।
একটি উদাহরন দিলে বিষয়টি আপনার ভালো ভাবে বুঝতে পারবেন। যেমনঃ আমি যদি একটি জব টিউন করি এভাবে যে আমার একটি পিএসডি টেমপ্লেট কে এইচটিএমএল এ রূপান্তর করতে হবে তাহলে আমি কিন্তু বেশ অনেক লোক জন পাব কাজ করানোর মত। কিন্তু এবার আমি যদি বলি আমার টুইটার বুটস্ট্রাপ দিয়ে একটি রেসপনসিভ সাইট ডিজাইন করতে হবে, অথবা আমি একটি বেশ ভালোমানের Ecommerce সাইট করাতে চাই তাহলে কিন্তু প্রতিযোগির সংখ্যা নেমে আসবে প্রায় অর্ধেকে, অর্থাৎ ঠিক যোগ্যতাসম্পন্ন লোক খুব কমই পাওয়া যাবে।
আসল সমস্যাটা আমাদের এখানেই আর তাই আমরা কাজ হারাচ্ছি। আমরা আমাদের কাজের যোগ্যতাকে খুবই সাধারন পিএসডি টু এইচটিএমএল বা সর্বোচ্চ ওর্য়াডপ্রেস ব্যাসিক পযর্ন্ত সীমাবদ্ধ রেখেছি। কিন্তু বিশ্ব এখন এগিয়ে গেছে অনেক। বায়ারদের চাহিদা দিন দিন পরিবর্তন হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে। ওয়েব পেজ ডেভেলোপিং এর কাজের অভাব নেই কিন্তু আমরা সেই কাজের সাথে তাল মিলিয়ে নিজেদের যোগ্য করে তৈরি করতে পারছি না।
আবার অনেকে যারা নতুন ফ্রিল্যান্সিংএ আসে তারা চায় ২/১ মাসের মধ্যে কাজ শিখে হাজার হাজার টাকা উপার্জন করতে। তাদের জন্য বলছি বিষয়টি এতো সহজ নয়।
আমরা ২০০০০, ২৫০০০ বা ৩০০০০ টাকা বেতনের চাকুরীর জন্য আমরা আমাদের জীবনের প্রায় অর্ধেক সময় পার করছি। আর ফ্রি্ল্যান্সিং জগতে প্রবেশ করে মাত্র কয়েক দিন কাজ শিখেই টাকা কামানোর স্বপ্ন দেখছি। আসলে শ্রমে ধন আনে আর পূণ্যে আনে সুখ। এ কথাটির আলোকেই তাই বলতে হয় আপনি যেমন শ্রম দিবেন তার ফলও কিন্তু সেরকম পাবেন। তাই হ্যান্ডসাম উপার্জন করতে হলে ভালো ভাবে কাজ শিখে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে আসুন এবং নিজের দক্ষতার উন্নয়ন ঘটান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের সাথে তবে আপনি প্রতিযোগিতার মাত্রা যাই থাকুক না কেন সাফল্য পাবেন।
আর এভাবে আমরা ভালো ভাবে কাজ শিখে যদি ফ্রিলান্সিং মার্কেটপ্লেসে আসি এবং নিজের দক্ষতার উন্নয়ন ঘটাই প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে তবে আমরা আশা করতে পারি ইনশাল্লাহ্ আমরা যারা বাংলাদেশী ওয়েব ডেভেলপার তারা একদিন সবগুলো ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে সামনের দিকে থেকে নেতৃত্ব দিবো।
No comments:
Post a Comment